Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

Title
মন্দির
label.image.title
Institute Type
মন্দির
Head Of The Institute
দিতেন্দ্র কুমার দাস খোকন
Designation
সভাপতি
Mobile
01712353434
Address
গোয়াইনঘাট উপজেলার রুস্তমপুর ইউনিয়নে মন্দির গুলি অবস্থিত। যোগাযোগের জন্য- 01712353434
History

 

১নং রুস্তমপুর ইউনিয়নে ৬টি মন্দির আছে। যথাঃ ১। গোরাগ্রাম শ্রী-শ্রী কালি মন্দির, ২। হাদারপার শিব মন্দির, ৩। কুনকিরী শিব মন্দির, ৪। মাঠিকাপা মনষা মন্দির, ৫। উপজাতি মন্দির, ৬। গোরাগ্রাম  শ্রী- শ্রী গৌরাঙ্গ মহা প্রভুর আখড়া ।

অবস্থান

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ১নং রুস্তমপুর ইউনিয়নের  ভারতীয় উপমহাদেশের বৈষ্ণব ধর্মের প্রবর্তক শ্রী চৈতন্য দেবের আদর্শে অনুপ্রাণীত ১। গোরাগ্রাম শ্রী-শ্রী কালি মন্দির, ২। হাদারপার শিব মন্দির, ৩। কুনকিরী শিব মন্দির, ৪। মাঠিকাপা মনষা মন্দির, ৫। উপজাতি মন্দির, ৬। গোরাগ্রাম  শ্রী- শ্রী গৌরাঙ্গ মহা প্রভুর আখড়া মন্দিরটি অবস্থিত; যা হিন্দু ধর্মালম্বীদের নিকট তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত।

 

চৈতন্য মহাপ্রভু

 

চৈতন্য মহাপ্রভু (১৪৮৬ খ্রিঃ – ১৫৩৩ খ্রিঃ) ছিলেন একজন বৈষ্ণব সন্ন্যাসী এবং ষোড়শ শতাব্দীর বিশিষ্ট বৈষ্ণব ধর্ম ও সমাজ সংস্কারক। তিনি অধুনা পশ্চিমবঙ্গের নদিয়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন।[১] গৌড়ীয় বৈষ্ণবগণ তাঁকে শ্রীকৃষ্ণের পূর্ণাবতার মনে করেন।[২] শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য ছিলেন ভাগবত পুরাণভগবদ্গীতা-য় উল্লিখিত দর্শনের ভিত্তিতে সৃষ্ট বৈষ্ণব ভক্তিযোগ মতবাদের একজন বিশিষ্ট প্রবক্তা।[৩] তিনি বিশেষত রাধাকৃষ্ণ রূপে পরম সত্ত্বার পূজা প্রচার করেন এবং জাতিবর্ণ নির্বিশেষে আচণ্ডাল-ব্রাহ্মণের কাছে হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্রটি জনপ্রিয় করে তোলেন। এটি হল:

হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।[৪][৫]

সংস্কৃত ভাষায় শিক্ষাষ্টক নামক প্রসিদ্ধ স্তোত্রটিও তারই রচনা। গৌড়ীয় বৈষ্ণব মতানুসারে, ভাগবত পুরাণের শেষের দিকের শ্লোকগুলিতে রাধারাণীর ভাবকান্তি সংবলিত শ্রীকৃষ্ণের চৈতন্যরূপে অবতার গ্রহণের কথা বর্ণিত হয়েছে।[৬] তাঁর জন্মতিথি প্রতিবছর গৌরপূর্ণিমা রূপে উদযাপন করা হয়।

চৈতন্য মহাপ্রভুর পূর্বাশ্রমের নাম 'গৌরাঙ্গ', 'গৌরচন্দ্র', বা 'নিমাই'। তার গাত্রবর্ণ স্বর্ণালি আভাযুক্ত ছিল বলে তাকে 'গৌরাঙ্গ' বা 'গৌরচন্দ্র' নামে অভিহিত করা হত;[৭] অন্যদিকে, নিম বৃক্ষের নীচে জন্ম বলে তার নামকরণ হয়েছিল 'নিমাই'।[৮] ষোড়শ শতাব্দীতে চৈতন্য মহাপ্রভুর জীবনী সাহিত্য বাংলা সন্তজীবনী ধারায় এক নতুন যুগের সূচনা ঘটিয়েছিল। সে যুগে একাধিক কবি চৈতন্য মহাপ্রভুর জীবনী অবলম্বনে কাব্য রচনা করে গিয়েছেন। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: কৃষ্ণদাস কবিরাজ গোস্বামীর চৈতন্য চরিতামৃত, বৃন্দাবন দাস ঠাকুরের চৈতন্য ভাগবত,[৯] এবং লোচন দাস ঠাকুরের

চৈতন্য মহাপ্রভু

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
 
 
পরিভ্রমণে ঝাঁপ দিন অনুসন্ধানে ঝাঁপ দিন
চৈতন্য মহাপ্রভু
হিন্দু ধর্মগুরু
Chaitanya-Mahabrabhu-at-Jagannath.jpg
 
শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভু
জন্ম ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৪৮৬ খ্রিস্টাব্দ, দোলপূর্ণিমা
জন্মস্থান নবদ্বীপ (অধুনা নদিয়া জেলা, পশ্চিমবঙ্গ)
পূর্বাশ্রমের নাম বিশ্বম্ভর মিশ্র, নিমাই, গৌরচন্দ্র
মৃত্যু ১৫৩৩ খ্রিস্টাব্দ
মৃত্যুস্থান পুরী (বর্তমান ওড়িশা)
গুরু ঈশ্বর পুরী (মন্ত্র গুরু), কেশব ভারতী (সন্ন্যাস গুরু)
দর্শন গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্ম, অচিন্ত্য ভেদ অভেদ, ভক্তিযোগ
সম্মান "বিদ্যাসাগর বাদীসিংহ", কৃষ্ণের পূর্ণাবতার, একই দেহে রাধা ও কৃষ্ণের ভাবকান্তির সমন্বয়
উক্তি

"চণ্ডালোহপি দ্বিজশ্রেষ্ঠঃ হরিভক্তিপরায়ণঃ"

"মুচি যদি ভক্তিসহ ডাকে কৃষ্ণধনে।
কোটী নমস্কার করি তাহার চরণে।।" ('গোবিন্দদাসের কড়চা'য় উল্লিখিত)

"তৃণাদপি সুনীচেন তরোরপি সহিষ্ণুনা।
অমানীনা মানদেন কীর্তনীয়া সদা হরি।।"

পাদটীকা  
 
 
বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো (৬০ ফুট) চৈতন্য মহাপ্রভু মূর্তি নবদ্বীপে

চৈতন্য মহাপ্রভু (১৪৮৬ খ্রিঃ – ১৫৩৩ খ্রিঃ) ছিলেন একজন বৈষ্ণব সন্ন্যাসী এবং ষোড়শ শতাব্দীর বিশিষ্ট বৈষ্ণব ধর্ম ও সমাজ সংস্কারক। তিনি অধুনা পশ্চিমবঙ্গের নদিয়ায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন।[১] গৌড়ীয় বৈষ্ণবগণ তাঁকে শ্রীকৃষ্ণের পূর্ণাবতার মনে করেন।[২] শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য ছিলেন ভাগবত পুরাণভগবদ্গীতা-য় উল্লিখিত দর্শনের ভিত্তিতে সৃষ্ট বৈষ্ণব ভক্তিযোগ মতবাদের একজন বিশিষ্ট প্রবক্তা।[৩] তিনি বিশেষত রাধাকৃষ্ণ রূপে পরম সত্ত্বার পূজা প্রচার করেন এবং জাতিবর্ণ নির্বিশেষে আচণ্ডাল-ব্রাহ্মণের কাছে হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্রটি জনপ্রিয় করে তোলেন। এটি হল:

হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।[৪][৫]

সংস্কৃত ভাষায় শিক্ষাষ্টক নামক প্রসিদ্ধ স্তোত্রটিও তারই রচনা। গৌড়ীয় বৈষ্ণব মতানুসারে, ভাগবত পুরাণের শেষের দিকের শ্লোকগুলিতে রাধারাণীর ভাবকান্তি সংবলিত শ্রীকৃষ্ণের চৈতন্যরূপে অবতার গ্রহণের কথা বর্ণিত হয়েছে।[৬] তাঁর জন্মতিথি প্রতিবছর গৌরপূর্ণিমা রূপে উদযাপন করা হয়।

চৈতন্য মহাপ্রভুর পূর্বাশ্রমের নাম 'গৌরাঙ্গ', 'গৌরচন্দ্র', বা 'নিমাই'। তার গাত্রবর্ণ স্বর্ণালি আভাযুক্ত ছিল বলে তাকে 'গৌরাঙ্গ' বা 'গৌরচন্দ্র' নামে অভিহিত করা হত;[৭] অন্যদিকে, নিম বৃক্ষের নীচে জন্ম বলে তার নামকরণ হয়েছিল 'নিমাই'।[৮] ষোড়শ শতাব্দীতে চৈতন্য মহাপ্রভুর জীবনী সাহিত্য বাংলা সন্তজীবনী ধারায় এক নতুন যুগের সূচনা ঘটিয়েছিল। সে যুগে একাধিক কবি চৈতন্য মহাপ্রভুর জীবনী অবলম্বনে কাব্য রচনা করে গিয়েছেন। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: কৃষ্ণদাস কবিরাজ গোস্বামীর চৈতন্য চরিতামৃত, বৃন্দাবন দাস ঠাকুরের চৈতন্য ভাগবত,[৯] এবং লোচন দাস ঠাকুরের চৈতন্যমঙ্গল[১০]

চৈতন্য জীবনকথা

 
চৈতন্য মহাপ্রভু, নবদ্বীপের প্রাচীন মায়াপুরে

চৈতন্য চরিতামৃত গ্রন্থের বর্ণনা অনুযায়ী, ১৪৮৬ খ্রিস্টাব্দের ১৮ ফেব্রুয়ারি (২৩ ফাল্গুন, ১৪০৭ শকাব্দ) দোলপূর্ণিমার রাত্রে চন্দ্রগ্রহণের সময় নদিয়ার নবদ্বীপে চৈতন্য মহাপ্রভুর জন্ম।[১১] তাঁর পিতামাতা ছিলেন অধুনা পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার অন্তর্গত নবদ্বীপের অধিবাসী জগন্নাথ মিশ্র ও শচী দেবী।[১২] চৈতন্যদেবের পূর্বপুরুষেরা ছিলেন পূর্ব বাংলার শ্রীহট্টের (অধুনা সিলেট, বাংলাদেশ) আদি বাসিন্দা। তাঁর পিতা জগন্নাথ মিশ্র শ্রীহট্ট থেকে দক্ষিণবঙ্গের নবদ্বীপে অধ্যয়ন ও সংস্কৃত শাস্ত্রচর্চার জন্য এসে বসতি স্থাপন করেন।[৪][১৩][১৪]

চৈতন্যদেবের পিতৃদত্ত নাম ছিল বিশ্বম্ভর মিশ্র। শৈশবাবস্থায় তাঁর পিতৃবিয়োগ ঘটে। প্রথম যৌবনে তিনি ছিলেন স্বনামধন্য পণ্ডিত। তাঁর প্রধান আগ্রহের বিষয় ছিল সংস্কৃত গ্রন্থাদি পাঠ ও জ্ঞানার্জন। ব্যাকরণশাস্ত্রে ব্যুৎপত্তি অর্জনের পর মাত্র কুড়ি বছর বয়সে তিনি ছাত্রদের অধ্যয়নের জন্য একটি টোল স্থাপন করেন।[৪] তর্কশাস্ত্রে নবদ্বীপের নিমাই পণ্ডিতের খ্যাতি ছিল অবিসংবাদিত। কেশবকাশ্মীর নামক এক দিগ্বিজয়ী পণ্ডিতকে তরুণ নিমাই তর্ক-যুদ্ধে পরাস্ত করেন। জপ ও কৃষ্ণের নাম কীর্তনের প্রতি তাঁর আকর্ষণ যে ছেলেবেলা থেকেই বজায় ছিল, তা জানা যায় তাঁর জীবনের নানা কাহিনি থেকে।[১৫] তাঁর প্রথমা পত্নী লক্ষ্মীপ্রিয়াদেবীকে বিয়ের পর একবার সিলেটে গিয়েছিলেন তিনি। পূর্ববঙ্গে পর্যটনকালে লক্ষ্মীপ্রিয়াদেবীর সর্পদংশনে মৃত্যু ঘটলে তিনি মায়ের অনুরোধে নিজের অনিচ্ছা সত্ত্বেও বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীর জলগ্রহণ করেন। [৪]

এরপর গয়ায় পিতার পিণ্ডদান করতে গিয়ে স্ত্রীবিয়োগকাতর নিমাই তাঁর গুরু ঈশ্বর পুরীর সাক্ষাৎ পান। ঈশ্বর পুরীর নিকট তিনি গোপাল মন্ত্রে দীক্ষিত হন। এই ঘটনা নিমাইয়ের পরবর্তী জীবনে গভীর প্রভাব বিস্তার করে।[১৬] বাংলায় প্রত্যাবর্তন করার পর শিক্ষাভিমানী পণ্ডিত থেকে কৃষ্ণভাবময় ভক্ত রূপে তাঁর অপ্রত্যাশিত মন পরিবর্তন দেখে অদ্বৈত আচার্যের নেতৃত্বাধীন স্থানীয় বৈষ্ণব সমাজ আশ্চর্য হয়ে যান। অনতিবিলম্বে নিমাই নদিয়ার বৈষ্ণব সমাজের এক অগ্রণী নেতায় পরিণত হন। হিন্দুধর্মের জাতিভেদ উপেক্ষা করে তিনি সমাজের নিম্নবর্গীয় মানুষদের বুকে জড়িয়ে ধরে 'হরি বোল' ধ্বনি বিতরণ করতেন এবং হরিনাম প্রচারে খোল-করতাল সহযোগে অনুগামীদের নিয়ে নবদ্বীপের রাজপথে 'নগর সংকীর্তন'এ বের হতেন। অত্যাচারী জগাই ও মাধাইকে তিনি ভক্তে পরিণত করেন। তাঁর প্রভাবে মুসলমান 'যবন হরিদাস' (হরিদাস ঠাকুর) বৈষ্ণব ধর্ম গ্রহণ করেন এবং নবদ্বীপের শাসক চাঁদকাজী তাঁর আনুগত্য স্বীকার করেন। চৈতন্যভাগবত-এ আছে, জাতিভেদের অসারতা দেখানোর জন্য তিনি শূদ্র রামরায়কে দিয়ে শাস্ত্র ব্যাখ্যা করিয়েছিলেন। [৪]

মাত্র চব্বিশ বছর বয়সে কাটোয়ায় কেশব ভারতীর নিকট সন্ন্যাসব্রতে দীক্ষিত হওয়ার পর নিমাই শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য নাম গ্রহণ করেন।[১৭] সন্ন্যাস গ্রহণের পর তিনি জন্মভূমি বাংলা ত্যাগ করে কয়েক বছর ভারতের বিভিন্ন তীর্থস্থান যথা: নীলাচল, দাক্ষিণাত্য, গৌড়, বৃন্দাবন পর্যটন করেন। পথে সত্যবাই, লক্ষ্মীবাই নামে বারাঙ্গনাদ্বয় এবং ভীলপন্থ, নারেজী প্রভৃতি দস্যুগণ তাঁর শরণ গ্রহণ করে। এইসব স্থানে ভ্রমণের সময় তিনি এতদাঞ্চলের ভাষা (যথা: ওড়িয়া, তেলুগু, মালয়ালম প্রভৃতি) বিশেষভাবে শিক্ষা করেন। এই সময় তিনি অশ্রুসজল নয়নে অবিরত কৃষ্ণনাম জপ ও কঠোর বৈরাগ্য সাধন (আহার-নিদ্রা ত্যাগ করে কৌপীনসার হয়ে) করতেন। জীবনের শেষ চব্বিশ বছরের অধিকাংশ সময় তিনি অতিবাহিত করেন জগন্নাথধাম পুরীতে[১৮] ওড়িশার সূর্যবংশীয় হিন্দু সম্রাট গজপতি মহারাজা প্রতাপরুদ্র দেব চৈতন্য মহাপ্রভুকে কৃষ্ণের সাক্ষাৎ অবতার মনে করতেন। মহারাজা প্রতাপরুদ্র চৈতন্যদেব ও তাঁর সংকীর্তন দলের পৃষ্ঠপোষকে পরিণত হয়েছিলেন।[১৯] ভক্তদের মতে, জীবনের শেষপর্বে চৈতন্যদেব ভক্তিরসে আপ্লুত হয়ে হরিনাম সংকীর্তন করতেন এবং অধিকাংশ সময়েই ভাবসমাধিস্থ থাকতেন।[২০] ১৫৩৩ খ্রীষ্টাব্দে আষাঢ় মাসের শুক্লা সপ্তমী তিথিতে রবিবারে পুরীধামে মাত্র ৪৮ বছর বয়সে তাঁর লীলাবসান ঘটে।[৪]

পাদুকা

নবদ্বীপ শহরের মহাপ্রভু ধাম মন্দিরে শ্রী শ্রী বিষ্ণুপ্রিয়া সমিতির তত্ত্বাবধানে রয়েছে শ্রীচৈতন্যর পাদুকা যুগল। কাঠের এই পাদুকা দু’টি ৫০০বছর আগে বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীকে দিয়ে গিয়েছিলেন স্বয়ং মহাপ্রভু। কথিত রয়েছে, শ্রীচৈতন্যদেব সন্ন্যাস নেওয়ার এক বছরের মাথায় শান্তিপুরে এসেছিলেন শচীমাতাকে দর্শনের জন্য। শচীমাতাকে দর্শনের পরেই পুরীধামে চলে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। অচমকা পুরীর যাত্রা বাতিল করে তিনি নবদ্বীপে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। শ্রীবাস, গদাধরকে সঙ্গে নিয়ে কীর্তন করতে তিনি নবদ্বীপে চলে আসেন। বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী সেই সময় বাড়িতে পুজো করছিলেন। সন্ন্যাসীদের স্ত্রীর মুখ দর্শনের নিয়ম নেই। তাই উঠোনে দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিলেন মহাপ্রভু। বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী ঘর থেকে বের হয়ে স্বামীকে প্রণাম করতে যান। প্রণাম শেষ হতেই বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী দেখেন, এক জোড়া পাদুকা রেখে গিয়েছেন মহাপ্রভু। সামনে মহাপ্রভু নেই। ওই দিন রাতে বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী মায়ের স্বপ্নাদেশ পান, জন্মভিটের নিম গাছ থেকে কাঠের বিগ্রহ তৈরি করে পুজো করতে এবং তার সঙ্গে পাদুকাও পুজো হবে। সেই থেকে মহাপ্রভুর পাদুকা পুজো হয়ে আসছে। বিষ্ণুপ্রিয়াদেবীর ভাইয়ের বংশধররা ওই পাদুকা যুগল সুরক্ষিত রেখেছেন। ১৯৬০সালের পর ওই পাদুকা দু’টিকে একটি রুপোর খাপের মধ্যে রাখা হয়।[২১]

অবতারত্ব

 
চৈতন্য মহাপ্রভু (ডানে) ও নিত্যানন্দের (বামে) মূর্তি, ইসকন মন্দির, দিল্লি

গৌড়ীয় বৈষ্ণবদের মতে, চৈতন্য মহাপ্রভু ঈশ্বরের তিনটি পৃথক পৃথক রূপের আধার: প্রথমত, তিনি কৃষ্ণের ভক্ত; দ্বিতীয়ত, তিনি কৃষ্ণভক্তির প্রবক্তা; এবং তৃতীয়ত, তিনি রাধিকার সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য বন্ধনে আবদ্ধ কৃষ্ণের স্বরূপ।[২২][২৩][২৪][২৫] ষোড়শ শতাব্দীতে রচিত চৈতন্য জীবনীগ্রন্থগুলির বর্ণনা অনুসারে, তিনি একাধিকবার অদ্বৈত আচার্যনিত্যানন্দ প্রভুকে কৃষ্ণের মতো বিশ্বরূপ দেখিয়েছিলেন।[২৬][২৭][২৮]

চৈতন্যদবের দেহকান্তি ও স্বভাব সম্পর্কিত একটি পদ নিম্নরূপ:

প্রকান্ড শরীর শুদ্ধ কাঞ্চন বরণ
আজানুলম্বিত ভুজ কমল লোচন।
বাহু তুলি হরি বলি প্রেমদৃষ্ট্যে চায়
করিয়া কল্মষ নাশ প্রেমেতে ভাসায়।

শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর অবতার গ্রহণের বিষয়ে তিনটি মত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য তা হল-১) কালের নিয়মে অবতার গ্রহণ ২) যুগধর্ম প্রবর্তন ৩) অতৃপ্ত প্রেমরস আস্বাদন। জীবনী কাব্যগুলোতে মূলত এই তিনটি কারণের কথাই ব্যাখ্যা করা হয়েছে।(তন্ময় মণ্ডল) [২৯]

চৈতন্য সম্প্রদায়